‘দরিদ্র মানুষের খাদ্য ও পুষ্টির উপর কোভিড ১৯- এর প্রভাব’ শীর্ষক জরীপ- এর ফলাফল নিয়ে মতবিনিময় সভা

দেশে করোনা সংকটে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ। কারো আয় কমেছে; কেউ চাকরি হারিয়েছে। দোকানপাট ও ব্যাবসায়িক কর্মকাণ্ড বন্ধসহ আয়ের পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে অনেকেরই। আয় না থাকায় গরিব মানুষ খাদ্য ও পুষ্টি সংকটে ভুগতে শুরু করেছে। বিশেষত শিশু, গর্ভবতী নারী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের পুষ্টির অবস্থা এখন চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল সভায় ‘খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ’ আয়োজিত ‘দরিদ্র মানুষের খাদ্য ও পুষ্টির ওপর কভিড-১৯-এর প্রভাব’ শীর্ষক পরিচালিত জরিপের ফলাফল নিয়ে এক মতবিনিময়সভায় বক্তারা এসব বলেন।

জরিপ অনুযায়ী, দেশব্যাপী লকডাউন চলাকালে ৯৮.৩ শতাংশ দরিদ্র মানুষের জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৮৭ শতাংশ মানুষ পর্যাপ্ত ও পুষ্টিকর খাদ্য পায়নি। খাদ্য অধিকার  বাংলাদেশ ও পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে এবং খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলীর সঞ্চালনায় এ আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম। এতে আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. এস এম জুলফিকার আলী ও আইসিসিও কো-অপারেশন বাংলাদেশের কর্মসূচিপ্রধান মো. আবুল কালাম আজাদ। জরিপের তথ্য-উপাত্ত ও সুপারিশ উপস্থাপন করেন বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ।

আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধান অতিথি ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বলেন, ‘করোনার আগে আমরা দেশের সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে যে অগ্রগতির কথা বলতাম, তা তো অবশ্যই কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। করোনার শুরুতে কোনো গবেষণা ছাড়াই কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, বহু মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বে। তাঁর নির্দেশেই সরকার ইতিমধ্যে পাঁচ কোটি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছে। মা ও শিশুদের জন্য দুধসহ পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ করা হয়েছে। নিম্ন আয় ও প্রান্তিক মানুষের যে চাহিদা তা অবশ্য শুধু এই খাদ্য সহায়তা দিয়েই পূরণ হবে না। সরকার অর্থ সহায়তাও প্রদান করেছে। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এ জরিপের ফলাফলকে মানতেই হবে যে সব মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা করোনাকালে সংকটের মধ্যে পড়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় খাদ্য, বিশেষত চাল সরবরাহের দিকটি কঠোরভাবে নজরদারি করছে। যদিও শুধু চাল দিয়েই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় না। করোনা একটি নতুন পরিস্থিতি তৈরি করেছে, তাতে আরো মানুষ দারিদ্র্যে পতিত হতে পারে বলে আমরাও আশঙ্কা করি।’

ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, “সরকারের উচিত দরিদ্রদের সহায়তা বাড়ানো, আর এ ক্ষেত্রে বেসরকারি খাত ও এনজিওদেরও যুক্ত করা। এ মহামারিকালে আমরা নিশ্চয়ই লক্ষ করেছি যে খাদ্যের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আইন থাকা কতটা জরুরি। খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের চলমান আন্দোলনের যৌক্তিকতা এখানেই। সংবিধানে ‘অধিকার’ আকারে উল্লেখ না থাকায় মানুষ খাদ্যের জন্য আইনগত দাবি তুলতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের যে প্রণোদনার ঘোষণা সেগুলো অবশ্যই সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।”

Source:
https://www.kalerkantho.com/print-edition/news/2020/07/17/935764

খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের জরিপ খাদ্য-পুষ্টি সংকটে ৮৭% দরিদ্র জনগোষ্ঠী-kalerkantha
Date

July 19, 2020

Client

RIGHT TO FOOD BANGLADESH

Category

Media Coverage

Write a comment:

*

Your email address will not be published.